শ্রেয়াস আইয়ারের ব্যাটিংয়ের পর বরুণ চক্রবর্তীর অন্যবদ্য বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডকে ৪৪ রানে হারিয়েছে ভারত। আর এ জয়ে গ্রুপ ‘এ’ থেকে সেরা দল হয়েই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে উঠল টিম ইন্ডিয়া। হারলেও আগেই শেষ চার নিশ্চিত করেছে কিউইরা।
রবিবার দুবাইয়ে প্রথমে ব্যাট করা ভারত নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ২৪৯ রান তোলে। জবাবে নিউল্যান্ডকে থামিয়ে দিয়েছে ২০৫ রানে।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দুবাইয়েই ভারত খেলবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। আর ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হওয়া নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনালে খেলবে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
বিরাট কোহলির তিনশ ম্যাচের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে ভারতের জয়ের নায়ক বরুণ। ক্যারিয়ারে কেবল দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা ৩৩ বছর বয়সী স্পিনারই সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা করেছেন কিউইদের। ৪২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বরুণ জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
দারুণভাবে শেষটা রাঙানো ভারতের শুরুটা যদিও ভালো ছিল না। টানা দশম ওয়ানডেতে টস হারেন রোহিত, ১৩ ম্যাচে ভারত। তবে আগে ব্যাটিংয়ের চাওয়া পূরণ হয় মিচেল স্যান্টনার ফিল্ডিং নেওয়ায়।
হেনরি ও কাইল জেমিসন শুরুতেই নাড়িয়ে দেন ভারতকে। সাত ওভারের মধ্যে ৩০ রানে ৩ উইকেট তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। শুভমান গিলের পর কোহলিকে ফিরিয়ে দেন হেনরি। দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে কোহলির আউটে অবদান রাখেন গ্লেন ফিলিপস। দুই উইকেটের মাঝে রোহিতকে ফেরত পাঠান জেমিসন।
শ্রেয়াস চাপে পড়ে যাওয়া দলকে এরপর টানেন। অক্ষর প্যাটলের সঙ্গে ৯৮ ও লোকেশ রাহুলের সঙ্গে গড়েন ৪৪ রানের জুটি। সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাওয়া শ্রেয়াসকে চমৎকার বাউন্সারে থামান উইল ও’রোক। ভারতীয় মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৯৮ বলে করেন ৭৯ রান।
এরপর লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে দলকে আড়াইশ রানের কাছে নিয়ে যান হার্দিক পান্ডিয়া। দুই ছক্কা ও চারটি চারে এই অলরাউন্ডার ৪৫ বলে করেন ৪৫ রান। শেষ দিকে আক্রমণে ফিরে রবীন্দ্র জাদেজা, পান্ডিয়া ও মোহাম্মদ শামিকে ফেরান হেনরি। ৪২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তিনিই নিউজিল্যান্ডের সফলতম বোলার।
জবাবে ভারতীয় স্পিন চতুষ্টয়ের সামনে উইলিয়ামসন ছাড়া নিউজিল্যান্ডের আর কোনো ব্যাটার টিকতে পারেননি। অভিজ্ঞ এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ছাড়া দলের আর কেউ যেতে পারেননি ত্রিশ পর্যন্ত। উইকেট শিকারের শুরুটা অবশ্য করেন একজন পেসার- পান্ডিয়া। তার বাউন্সারে র্যাম্প শটের চেষ্টায় ডিপ থার্ডম্যানে ক্যাচ দেন রাচীন রবীন্দ্র। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা এই তরুণের দারুণ ক্যাচ নেন অক্ষর।
বরুণ উইল ইয়াংকে দিয়ে শিকার শুরু করেন। এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন উইলিয়ামসন। আরেক প্রান্তে ভারতীয় স্পিনে নিয়মিত উইকেট হারায়নিউ জিল্যান্ড। কিউইদের ব্যাটিং গভীরতা যথেষ্ট। তবে বরুণের স্পিনে লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও ততটা লড়াই করতে পারেনি দলটি। ফিলিপস, মাইকেল ব্রেসওয়েল, স্যান্টনার ও মিচেলকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূরণ করার সঙ্গে দলকে দারুণ জয় এনে দেন বরুণ।
বরুণ ছাড়া এদিন কোটা পূরণ করেন কেবল অক্ষর। তিনিই নেন উইলিয়ামসনের দামি উইকেট। ছন্দে থাকা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ৭ চারে ১২০ বলে খেলেন ৮১ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। তবে পারেননি কাজ শেষ করে আসতে, নিউজিল্যান্ডও পারেনি হার এড়াতে।