দেশে কেউ না কেউ কিডনি রোগে ভুগছে, এমন মানুষের অনুমিত সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখ। প্রতিবছর এ রোগে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ সুস্থ জীবনধারার চর্চা ও কিডনি স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।
কিডনি মানুষের দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমাদের দুটি কিডনির মাধ্যমে রক্ত পরিশোধিত হয়, অর্থাৎ শরীরের কোষ পর্যায়ের বিপাকীয় যে বর্জ্য তৈরি হয়, তার পরিশোধন কিডনির অন্যতম কাজ। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের সুস্থতা রক্ষার ক্ষেত্রে আমরা অনেকটাই উদাসীন। তার জন্য বড় ধরনের খেসারত দিতে হতে পারে আপনাকে। এবার তবে জেনে নিন কিডনি সুস্থ রাখার নিয়মগুলো। কিডনি যেভাবে সুস্থ রাখবেন–
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থেকে যে কোনো সময় কিডনি আক্রান্ত হতে পারে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে বা কেউ যদি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রেশারের ওষুধ সেবন না করেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর আকস্মিক কিডনি রোগে আক্রান্তের আশঙ্কা বহু গুণ বেড়ে যায়।
বিনা কারণে এনএসএআইডি গোত্রের ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করবেন না। বিভিন্ন ধরনের ব্যথানাশক ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করলে কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
পরিমিত পরিমাণে (ছয়-আট গ্লাস বা দেড় থেকে দুই লিটার) পানি পান করুন। নজর রাখতে হবে, শরীরে পানির ঘাটতি যেন দেখা না দেয়। আবার বেশি বেশি পানি খেলে কিডনি ভালো থাকবে, এমন কথা ঠিক নয়। শীতকালে পানির প্রয়োজন কম হলেও গরমের সময় বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
শিশুর গলাব্যথা (টনসিলাইটিস) খোসপাঁচড়া বা স্ক্যাবিস হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। এসব রোগের জটিলতায় কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ডায়রিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসা নিন। কেননা সঠিকভাবে ডায়রিয়ার চিকিৎসা না হলে হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে।
পরিবারে কিডনি রোগের ইতিহাস থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা করা উচিত।
হাত-পা ফুলে গেলে, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কেননা এসব সমস্যা কিডনি রোগের লক্ষণ প্রকাশ করে।
ভেজাল খাবার (রঞ্জক পদার্থ, ফরমালিন), ভেজাল ওষুধ (ইথিলিন গ্লাইকল, অপরিশুদ্ধ হারবাল ওষুধ) আপনার কিডনিকে নীরবে বিকল করে দিতে পারে।
ধূমপান পরিহার করুন। ধূমপানের কারণে দেহের অন্যান্য অঙ্গের মতো কিডনিও আক্রান্ত হতে পারে।
লেখক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক