দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন নদনদীর পানি আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। গতকাল শনিবার কেন্দ্রের নিয়মিত বুলেটিনে জানানো হয়, এদিন সকাল ৯টায় দেশের ১০টি নদীর পানি ২১ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ঘাঘট, যমুনাশ্বরী, করতোয়া, বাঙ্গালী, পুনর্ভবা, টাঙ্গন, ইছামতী-যমুনা, আত্রাই, মহানন্দা এবং ছোট যমুনা নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদী-সংলগ্ন কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে। আবহাওয়া অধিদপ্তরও তাদের পূর্বাভাসে আজ রোববার রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে।
টেকসই না হওয়ার কারণে বাঁধ বারবার ভেঙে গিয়ে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। গতকাল থেকে জেলায় পানি কমা শুরু হলেও এখনও বিভিন্ন বাঁধ ও সড়কের কমপক্ষে ১০টি স্থান দিয়ে পানি ঢুকছে জনপদে। জকিগঞ্জে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে গত ১৪ মে থেকে ভাঙন শুরু হয়। একে একে উপজেলার নরসিংহপুর, ছবরিয়া, রারাই, বাখরশালসহ ৭টি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে নরসিংহপুরসহ বাঁধের কয়েকটি স্থান মেরামত করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডও (পাউবো) বাঁধের ২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের মধ্যে ১৫টি জরুরি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে। বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার সড়কের বাজার ও খসরুপুর সড়কের দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। কানাইঘাট-জকিগঞ্জ সড়কের সুরইঘাট ও গোয়াইনঘাট উপজেলার ডাউকী নদীর তীররক্ষা বাঁধের নয়াগাঙের পাড় এলাকা ভেঙে যায়। সিরাজগঞ্জ জেলা পাউবো সূত্র জানায়, যমুনা নদীতে গত ১২ ঘণ্টায় পানি ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে।
উত্তরাঞ্চলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও ধরলা বইছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। নাগেশ্বরীতে দুধকুমার নদীর বাঁধ ১০০ মিটার ভেঙে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ১২টি গ্রাম। টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে যমুনা নদীর পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি। পানির তীব্র স্রোতে উপজেলার বেড়িপটল এলাকার সড়ক ভেঙে গেছে।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন ব্যুরো ও প্রতিনিধিরা)