সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আসরটি মাঠে গড়াতে বাকি আর সপ্তাহ তিনেক। তবে বাংলাদেশের পারফরম্যানসে যেন তা বোঝাই যাচ্ছে না। ঘরের মাটিতে কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের হয়তো প্রথম তিন ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে, তবে আশানুরূপ কিংবা বড় কিছু প্রত্যাশার ক্রিকেট খেলতে পারেনি।
টপ অর্ডারে হতশ্রী ব্যাটিং, মিডেল অর্ডারে রান পেলেও বড় সংগ্রহ না পাওয়া এছাড়া বোলারদের শুরুটা ভালো হলেও পরবর্তীকালে সেই ধারাবাহিকতা ধরে না রাখতে পারা সব কিছু মিলে যেন স্বস্তি নেই পারফরম্যানস নিয়ে। তবে সাবেক টাইগার প্রধান নির্বাচক ও বর্তমান বিসিবির চিফ কো অর্ডিনেটর অব প্রোগ্রাম মিনহাজুল আবেদিন নান্নু মনে করেন এখনো হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সময়মতো (বিশ্বকাপে) পারফরম করলেই ফলাফল পজেটিভ আশা সম্ভব।
গতকাল গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জিম্বাবুয়ে সিরিজে টাইগারদের পারফরম্যানস নিয়ে নান্নু বলেন, ‘ক্রিকেটে কিন্তু হতাশার কিছু নেই। প্রতিটা দিন সামনের দিন চিন্তা করে আগাতে হয় এবং ব্যাটারদের জন্য প্রতিটা দিনই লার্নিং প্রসেসের মধ্য দিয়েই জেতে হয়। কারণ কেউ ধারণাও করতে পারে না, দিনের যে কোনো একটি ভালো বল যে কোনো একটা ব্যাটারের কাঁধের ওপর দিয়ে চলে আসতে পারে। সুতরাং এটা নিয়ে আক্ষেপের কিছু নেই।
গত এক বছর ধরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলো কিন্তু যথেস্ট ভালো খেলেছে। তাই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আমাদের আশা ছিল। আমরা এই ফরম্যাটে কিন্তু আগে থেকেই অনেক পিছিয়ে ছিলাম। সেই হিসেবে এখন কিন্তু আস্তে আস্তে এই ফরম্যাটের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। আশা করছি সবাই যদি সবার মতো করে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারে। তাহলে দিন শেষে ফলাফলও পজিটিভ আসবে।’
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অংশ নিচ্ছে ২০ দল। তবে এই বিশ দলের অধিনায়কের মধ্যে স্ট্রাইক রেটে টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর (১১১.০৬) অবস্থান ১৯ নম্বরে। তার নিচে শুধু রয়েছেন প্রথম বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে আসা আফ্রিকার দেশ উগান্ডার অধিনায়ক ব্রায়ান মাসাবা (১০৭.৯৪)। যদিও মাসাবা একজন বোলার, আর শান্ত একজন টপ অর্ডারের ব্যাটার। তাই এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমে চলছে বেশ আলোচনা-সমালোচনা। এছাড়া ওপেনার লিটন কুমার দাসও ভুগছেন রানের খরায়। লম্বা সময় ধরেই হাসছে না তার ব্যাট। পাশাপাশি ওপেনিং অভিজ্ঞ ওপেনারও নেই দলে।
বিশ্বকাপের আগে দেশের টপ অর্ডার ব্যাটারদের এমন অফ ফর্ম খানিকটা চিন্তার কি না, জানতে চাওয়া হলে টাইগারদের সাবেক প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘যে কোনো জায়গায় টপ অর্ডারের ব্যাটাররা যদি অফ ফর্মে থাকে, তাহলে অবশ্যই দলের জন্য একটা চিন্তা থাকা। তাছাড়া যে দুই জনের কথা আসছে (শান্ত-লিটন), এদের কিন্তু বিগত সময়ে অনেক ভালো খেলার রেকর্ড আছে। সুতরাং এটা নিয়ে এত ভাবনার কিছু নেই। সঠিক সময়ে যদি সঠিক পারফরম্যানস করতে পারে, তাহলে দলও উপকৃত হবে।’
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভালো খেলতে হলে বিদেশি ফ্রাঞ্জাইজি টুর্নামেন্টে ক্রিকেটারদের খেলা গুরুত্বপূর্ণ, এছাড়া উন্নতি বা খেলোয়াড়দের এ ফরম্যাটে মূল্যায়ন করাটা কষ্টকর বলে মনে করেন নান্নু। বলেন, ‘ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট যদি বেশি না খেলে, তাহলে কিন্তু খেলোয়াড়দের মূল্যায়ন করা যাবে না। বিদেশে ভালো ক্রিকেটে খেলতে হবে। আফগানিস্তানের মতো দলের প্রথম সারির ৮-৯ জন খেলোয়াড় কিন্তু আইপিএলে খেলছে কিংবা বিভিন্ন লিগে খেলছে।
তো আমাদের দেশের কয়টা খেলোয়াড় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এমন বিদেশে খেলে, হাতেই গোনা যাবে। বেশি হলে এক জন/দুই জন, হয়তো লঙ্কান ক্রিকেটে একটু বেশি। অন্যন্যা জায়গায় খুব কম ক্রিকেটার যাচ্ছে। এই জায়গায় ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে যদি খুব বেশি খেলোয়াড়ের অভিজ্ঞতাটা না আনতে পারি, তাহলে কিন্তু টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভালো করাটা কষ্টকর হয়ে যাবে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি যে ডমেস্টিকে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আরো কিছু করা যায় কি না। প্রথম সারির খেলোয়াড়দের নিয়ে যদি আরো কিছু ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে হয়তো ভালো একটা দিক দেখতে পারবেন।’