ভারত সিরিজ চলাকালীনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলে ফেললেও আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলার মাধ্যমে নিজের টেস্ট অবসরের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন তিনি। সেই থেকে আলোচনায়, সাকিবের এমন ইচ্ছে পূরণ হবে কিনা।
কারণ দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে সাকিবকে নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নীরব থাকা এবং হাসিনা সরকারের সংসদ সদস্য হিসেবে সাকিবের প্রতি ছাত্র-জনতার ওই ক্ষোভ তার দেশে ফেরা এবং নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে সংশয় জাগায়। এজন্য বাংলাদেশে আসা ও যাওয়া নিয়ে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন সাকিব। বিসিবিও চায় তাকে ঘরের মাঠ থেকে বিদায় দিতে। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে শতভাগ নিশ্চয়তা কারো মুখ থেকেই শোনা যায়নি। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সাকিবের কাছে রাজনৈতিক ব্যাখ্যার আহ্বান জানান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনের সময় নীরব থাকায় ক্ষমা চেয়ে রাজনীতিতে জড়ানোর ব্যাখ্যা দেন সাকিব।
আজ যখন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম পরিদর্শনে এলেন, সেখানেও উঠে এসেছে একই প্রসঙ্গ। তবে এবারও সাকিবের সেই বিষয়ে কোনো সঠিক জবাব পাওয়া যায়নি। সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন সাকিবের ফেসবুক পোস্ট প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘আগের ফ্যাসিবাদি সরকারের সঙ্গে তার (সাকিব) সম্পর্ক ছিল, যা নিয়ে উনি ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে, সেটা দেখেছি। তবুও কিছু ইমোশন রয়ে গেছে। তার ব্যাখ্যা নিয়ে লজিক্যাল-ইলজিক্যাল বিষয় আছে, সেদিকে যাব না। তবে কোনো আইনি সমস্যা নেই, এখন পর্যন্ত এটাই দেখা যাচ্ছে। তবে আইন তার মতো চলে, এ নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে মন্তব্য এসেছে ইতোপূর্বে।’
সম্প্রতি সাকিবকে দেশে খেলতে না দেওয়ায় মিরপুরে আন্দোলন হয়। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একজন ক্রিকেটার দেশে এসে খেলবেন এবং তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। দেশে আসার ক্ষেত্রে আমি কোনো বাধা দেখি না। তবে যে দেয়াল লিখন হয়েছে, এটা আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। এটা ইমোশনের ব্যাপার, গণতান্ত্রিক দেশে তাদের যেকোনো ধরনের মুভমেন্ট (আন্দোলন ও দাবি) করার অধিকার আছে। তবে এক্ষেত্রে আমার আহ্বান থাকবে যাতে কারও নিরাপত্তার জন্য হুমকি না আসে। আইনি বিষয় থাকলে সেটার জন্য আইন মন্ত্রণালয় আছে, আমি মন্তব্য করতে পারব না। তবে নিরাপত্তার প্রতি সবাই সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।’
আগামী সপ্তাহে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা। মিরপুরে ২১ অক্টোবর শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। সাকিবের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা, ‘যেহেতু এখানে দক্ষিণ আফ্রিকা আসবে। সেক্ষেত্রে আমাদের পরিবেশ ভালো রাখতে হবে। না হলে বাইরের দেশগুলো দেশে খেলতে আসার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে।’
সাকিবের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা আমরা নিশ্চিত করব।’