হাঁটুব্যথা এমন একটি সাধারণ সমস্যা, যা সব বয়সী লোককে আক্রান্ত করে। হালকা হাঁটুব্যথা কিছু নিয়ম মেনে চললে ঠিক হয়ে যায়। নির্দিষ্ট ব্যায়াম করলে ও নি-ব্রেস পরলে হাঁটুব্যথা কমে। আবার অনেক ক্ষেত্রে হাঁটুতে অপারেশনেরও প্রয়োজন হতে পারে।
উপসর্গ
হাঁটুর বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হতে পারে এবং ব্যথা অল্প থেকে তীব্র হতে পারে। হাঁটুব্যথায় সাধারণত নিচের উপসর্গগুলো দেখা দেয়–
-হাঁটু ফুলে যাওয়া ও শক্ত হয়ে যাওয়া;
-হাঁটু লাল হয়ে যাওয়া এবং হাত দিলে গরম অনুভূত হওয়া;
-হাঁটুতে দুর্বলতা অনুভব করা বা জোর না পাওয়া;
-হাঁটু পুরোপুরি সোজা করতে না পারা।
হাঁটুতে বাতের সমস্যা
সচরাচর যে বাতগুলো হাঁটুকে আক্রান্ত করে তা হলো– -অস্টিওআর্থ্রাইটিস -রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস -গাউট-সিউডোগাউট-সেপটিস আর্থ্রাইটিস।
কিছু বিষয় হাঁটুব্যথার সমস্যা বাড়িয়ে দেয়, যেমন– অতিরিক্ত ওজন, হাঁটুর গঠনে অস্বাভাবিকতা, হাঁটুর মাংসপেশির দুর্বলতা ও কিছু খেলাধুলা, আগে হাঁটুতে আঘাত পাওয়া।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
-এক্স-রে -সিটি (কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফি) স্ক্যান – আলট্রাসাউন্ড – এমআরআই (ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং)। এ ছাড়া ইনফেকশন, গাউট বা সিউডোগাউট সন্দেহ করা হলে কিছু রক্তের পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়।
চিকিৎসা
হাঁটুব্যথার সঠিক কারণের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়। যেমন–
ওষুধ : রোগীর অবস্থা অনুযায়ী ব্যথা কমানোর জন্য বেশ কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। একমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাত্রায় সঠিক নিয়মে ওষুধ খেতে হবে।
থেরাপি : হাঁটুর চারপাশের পেশিগুলো শক্তিশালী করলে হাঁটু স্থিতি হয়। এ ক্ষেত্রে ঊরুর সামনে ও পেছনের মাংসপেশির ব্যায়াম শেখানো হয়। হাঁটুর অস্থিসন্ধিতে বিভিন্ন ধরনের ব্রেস পরিয়ে দেওয়া হয়।
ইনজেকশন: কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাঁটুর অস্থিসন্ধিতে সরাসরি ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয়।
সার্জারি : যদি আপনার হাঁটুতে আঘাত লাগে তাহলে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গেই যে অপারেশন লাগবে, তা নয়। হাঁটুতে বিভিন্ন ধরনের সার্জারি করা হয়, যেমন– আর্থ্রোস্কোপিক সার্জারি, পার্শিয়াল নি-রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি, টোটাল নি-রিপ্লেসমেন্ট ইত্যাদি।
লাইফস্টাইল ও ঘরোয়া চিকিৎসা
আঘাতপ্রাপ্ত হাঁটুর ক্ষেত্রে আপনি নিচের ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করবেন–
বিশ্রাম: স্বাভাবিক কাজকর্ম বাদ দিয়ে আপনি হাঁটুকে যতদূর সম্ভব বিশ্রাম দিন।
ঠান্ডা সেঁক: বরফ আপনার হাঁটুর ব্যথা ও প্রদাহ কমায়। যদিও বরফ সাধারণত নিরাপদ, তবুও ২০ মিনিটের বেশি ব্যবহার করবেন না।
কমপ্রেশন: এতে হাঁটুতে পানি জমতে পারে না, হাঁটু স্থিতি থাকে।
পা উঁচু করে রাখা: ফোলা কমাতে আপনার আঘাতপ্রাপ্ত পা বালিশের ওপর রেখে শোবেন।
লেখক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।