এ যেন সেই নাইন এলেভেনের দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি দেখলো বিশ্ববাসী। তবে এবার যুক্তরাষ্ট্র নয়, হামলার শিকার হলো বিশ্ব রাজনীতির প্রভাবশালী রাষ্ট্র রাশিয়া। রাশিয়ার কাজান শহরে তিনটি বহুতল ভবনে পর পর ড্রোন হামলা চালালো ইউক্রেন।
রুশ পরমাণু সুরক্ষা বাহিনীর প্রধানকে খুনের পর শনিবার সকালে ৯/১১-র ধাঁচে রাশিয়ার কাজান শহরে ড্রোন হামলা চা্লায় ইউক্রেন। এরই মধ্যে হামলার বেশ কয়েকটি ভিডিও সমাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে। তাতে দেখা গেছে গগনচুম্বী তিনটি বহুতলে সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে ড্রোনগুলো। তার পরই ঘটে বিস্ফোরণ। কালো ধোঁয়ায় ভরে যায় গোটা এলাকার আকাশ। মুহুর্মুহু ড্রোন হামলার পরেই নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কাজান বিমানবন্দর।
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও গুলোতে দেখা গিয়েছে, চারিদিক থেকে ঝাঁকে-ঝাঁকে ছুটে আসা বিশালাকায় ড্রোনগুলি সরাসরি বহুতল ভবনগুলিতে গিয়ে ধাক্কা মেরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ধাক্কার সঙ্গে সঙ্গেই ভবনগুলিতে দাউ-দাউ করে জ্বলছে আগুন। প্রাণ বাঁচাতে ভবনগুলো থেকে বেরিয়ে রাস্তায় জড়ো হচ্ছেন বাসিন্দারা। অনেকে প্রাণভয়ে নিরাপদ দুরত্বে ছুটছেন। ড্রোন হামলায় হতাহতের কোনও খবর না পাওয়া গেলেও বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
চলতি বছরেই কাজান শহরে বসেছিল ব্রিকস সম্মেলন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডন্ট শি চিনপিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা ওই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। এবার সেই একই শহরের সুউচ্চ অট্টালিকাকে লক্ষ্য করে একের পর এক ড্রোন আছড়ে পড়লো।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে ড্রোন হামলার কথা স্বীকার করা হয়েছে। যদিও মস্কোর দাবি তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশ কয়েকটি ড্রোনকে তৎপরতার সঙ্গে ধ্বংস করেছে। তবে হামলার বিষয়টি ইউক্রেন স্বীকার না করলেও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ছিলো দেশটির কর্মকর্তরা। জানা গেছে, হামলার পর শনিবার রাতেই মস্কো ইউক্রেনে এস-৪০০ মিসাইল ও ১১৩টি ড্রোন পাঠিয়েছে। তবে ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর দাবি, হামলার সময় ৫৭টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। এছাড়া ৫৬টি ড্রোনকে ইলেকট্রনিকভাবে জ্যাম করা হয়েছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলা চালিয়েছিল আল কায়দা গোষ্ঠী। গোটা বিশ্ব শিউরে উঠেছিল আত্মঘাতী বিমানের বহুতল ভবনের পেটে ঢুকে যাওয়ার দৃশ্য দেখে। সেই হামলায় প্রায় ৩ হাজার মানুষে নিহত হন। আহত হন প্রায় ৬ হাজার। সেই বীভৎস ইতিহাসই আবার ফিরে এলো রাশিয়ায়-এমনটিই বলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে।