যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ অনুযায়ী গাজা উপত্যকা থেকে আংশিকভাবে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ইসরায়েল। এর ফলে কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি উত্তর গাজার ধ্বংসস্তূপে ভরা নিজ শহরে ফিরে আসতে শুরু করেছেন। রোববার (১২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফেরত আসা অনেকেই জানিয়েছেন, বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটের ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ দেখে তারা শোকাহত ও হতভম্ব। দীর্ঘ যুদ্ধের পর এই আংশিক সেনা প্রত্যাহারকে তারা আশার আলো হিসেবে দেখছেন।
এদিকে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ ও পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় কোনো ধরনের বিদেশি অভিভাবকত্ব তারা গ্রহণ করবে না। একই সঙ্গে গাজার কর্মকর্তারা যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, সোমবার গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে। একই সঙ্গে গাজায় প্রবেশের সব পথ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। গাজায় মানবিক সহায়তার জন্য ৬ হাজার ত্রাণসামগ্রী বোঝাই ট্রাক প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের মেয়র জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় পুরো গভর্নরেটের প্রায় ৮৫ শতাংশ এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। শহরের রাস্তাঘাট থেকে প্রায় ৪ লাখ টন ধ্বংসস্তূপ অপসারণ করতে হবে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই ছিটমহলে ফিলিস্তিনিদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চলছে। মানবিক সহায়তা বিতরণ ও ধ্বংসস্তূপ থেকে দেহাবশেষ উদ্ধারের জন্য গাজা উপত্যকাজুড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মিশন পরিচালিত হচ্ছে।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সেনা প্রত্যাহার যদি কার্যকরভাবে অব্যাহত থাকে, তাহলে ধীরে ধীরে গাজার পুনর্গঠনের পথ খুলে যেতে পারে। তবে এখনো যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগবে বলে সতর্ক করেছেন তারা।