সরকারি সংরক্ষণ পদক্ষেপে দ্বীপের প্রবাল, সামুদ্রিক মাছ ও অন্যান্য প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ছেঁড়াদিয়া এলাকায় বিরল কাঁটাযুক্ত পটকা মাছ দেখা গেছে, যা দ্বীপের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য ফিরে আসার বড় ইঙ্গিত। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান জানান, সাধারণত এই অঞ্চলে এই প্রজাতির মাছ তেমন চোখে পড়ে না। মাছটি দেখে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেছেন, কারণ এটি প্রমাণ করে সরকারি পদক্ষেপের সুফল ফলতে শুরু করেছে।
গবেষক দল দ্বীপের নানা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তারা কাঁকড়া, কাছিম, শামুক-ঝিনুক এবং পরিযায়ী পাখির বংশবিস্তার লক্ষ্য করেছেন। বিশেষত ছেঁড়াদিয়ার পশ্চিম সৈকতে জোয়ারের সময় আটকে পড়া কাঁটাযুক্ত পটকা মাছটি খুবই বিরল।
এই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম ডায়োডন হলোকানথাস (Diodon holocanthus) বা দীর্ঘ-কাঁটাযুক্ত পোর্কুপাইন ফিশ। প্রাপ্তবয়স্ক মাছের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। মাছটি শিকার হিসাবে শামুক, কাঁকড়া ও ছোট মাছ খায়। বিপদে শরীর ফুলিয়ে কাঁটা বের করে আত্মরক্ষা করে।
সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তিন বছরব্যাপী প্রকল্প চালানো হচ্ছে। এর আওতায় সৈকতে কেয়াবাগান সৃষ্টি, তথ্য সংগ্রহ, মা কাছিমের ডিম সংরক্ষণ, লোকজনকে সচেতন করা এবং গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। প্রকল্প পরিচালক কামরুল হাসান জানান, এই পদক্ষেপের কারণে দ্বীপে প্রাণীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজির হোসেন বলেন, ছেঁড়াদিয়ায় কাঁটাযুক্ত পটকা মাছের উপস্থিতি বাড়ছে। স্থানীয় জেলে জমির হোসেন জানান, সাধারণত পটকা মাছ বিষাক্ত হওয়ায় খাওয়া হয় না।
পরিবেশবিদদের মতে, পর্যটকদের যাতায়াতে বিধিনিষেধ, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো এবং অন্যান্য সংরক্ষণ পদক্ষেপের ফলে সেন্ট মার্টিনের প্রকৃতিতে ধীরে ধীরে ভারসাম্য ফিরে আসছে। কাঁটাযুক্ত পটকা মাছের দেখা এই ইতিবাচক পরিবর্তনের এক সুস্পষ্ট প্রমাণ।