থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের মা, রাজমাতা সিরিকিত আর নেই। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) স্থানীয় সময় রাত ৯টা ২১ মিনিটে রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
থাই রয়্যাল হাউসহোল্ড ব্যুরো এক বিবৃতিতে জানায়, ২০১৯ সাল থেকে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন রাজমাতা। চলতি মাসে তাঁর রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে, এরই মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
দীর্ঘ ছয় দশকের বেশি সময় থাইল্যান্ডের রানি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সিরিকিত। তিনি ছিলেন দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় সিংহাসনে থাকা রাজা ভূমিবল আদুলাদেজের স্ত্রী। ২০১৬ সালে রাজা ভূমিবলের মৃত্যু হলে তাঁদের পুত্র মহা ভাজিরালংকর্ন রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন।
প্রয়াত রানির জন্য রাজকীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন রাজা ভাজিরালংকর্ন। তাঁর মরদেহ ব্যাংককের রাজপ্রাসাদের দুসিত থোর্ন হলে সমাহিত করা হবে। রাজপরিবারের সদস্যরা এক বছরের শোক পালন করবেন বলে জানানো হয়েছে।
রানি সিরিকিতের মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোক নেমে এসেছে। থাই প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল মালয়েশিয়া সফর বাতিল করে দেশে ফিরে এসেছেন।
রাজমাতা সিরিকিতের জন্ম এক কূটনৈতিক পরিবারে। তাঁর বাবা ছিলেন ফ্রান্সে নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত। প্যারিসেই পড়াশোনার সময় রাজা ভূমিবলের সঙ্গে প্রথম দেখা হয় তাঁর। ১৯৫০ সালের ২৮ এপ্রিল তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ষাটের দশকে রাজকীয় এই দম্পতি বিশ্বভ্রমণ করেন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার, ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও তারকা এলভিস প্রিসলির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁর রুচিশীল পোশাক ও ব্যক্তিত্ব বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়।
১৯৭৬ সাল থেকে থাইল্যান্ডে তাঁর জন্মদিন ১২ আগস্ট ‘মা দিবস’ হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। ২০১২ সালে স্ট্রোকের পর থেকে তিনি জনসমক্ষে খুব কমই দেখা দিতেন।
রানি সিরিকিত এক ছেলে (রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন) ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন।